শুক্রবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ১০:২৯ অপরাহ্ন
তরফ নিউজ ডেস্ক: সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের অনশন প্রত্যাহার করে আলোচনায় বসতে আবারো আহ্বান জানালেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।
মন্ত্রী বলেছেন, আলোচনা হচ্ছে সব সমস্যার সমাধানের একমাত্র উপায়। শিক্ষার্থীদের সব দাবি সম্পর্কে আমরা অবহিত আছি। আমরা প্রত্যাশা করব এবং আমাদের চাওয়া তারা আলোচনায় বসবে। তাদের জন্য আলোচনার দরজা সবসময় খোলা আছে। যদি অনশন অব্যাহত রেখেও কেউ আলোচনায় বসতে চায় তাদের সময় দেব।
গত কয়েকদিন ধরে সিলেটের এই বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভুত পরিস্থিতি নিয়ে শিক্ষকদের পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন দীপু মনি।
শনিবার রাতে রাজধানীর হেয়ার রেডে শিক্ষামন্ত্রীর সরকারি বাসভবনে সভায় বাংলাদেশ মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যও অংশ নেন।
শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করতে শুক্রবার রাত ১১টার দিকে শিক্ষকদের পাঁচ সদস্যের দল বিমানযোগে ঢাকায় পৌঁছান। তাদের মধ্যে আছেন- বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক তুলসি কুমার দাস, সাধারণ সম্পাদক মহিবুল আলম, ভৌত বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক রাশেদ তালুকদার, ফলিত বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. আরিফুল ইসলাম, ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের ডিন. খায়রুল ইসলাম রুবেল।
এর আগে শুক্রবার বিকালে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মোবাইলে কথা বলেন শিক্ষামন্ত্রী। আলোচনায় বসার জন্য মন্ত্রী শিক্ষার্থীদের একটি প্রতিনিধি দলকে ঢাকায় আসার আহ্বান জানালে প্রথমে রাজি হলেও পরে শিক্ষার্থীরা প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন।
শিক্ষামন্ত্রীর পক্ষ থেকে সেখান যাওয়া আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেলের মাধ্যমে মন্ত্রীকে ক্যাম্পাসে এসে আলোচনা করার অনুরোধ করেন শিক্ষার্থীরা। তারা মন্ত্রীকে অনলাইন মাধ্যমে আলোচনায় বসার প্রস্তাব দেন।
এদিকে অন্যান্য দাবির সঙ্গে সবশেষ যুক্ত হওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে চলা অনশনে ১৬ জন শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়েছেন বলে জানা যায়।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) শিক্ষার্থীদের জন্য সবসময় আলোচনার দ্বার খোলা রয়েছে। শিক্ষক বা শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অনভিপ্রেত কিছু আমরা কামনা করি না। গত কয়েক দিন যা ঘটেছে তা আমরা চাইনি। এখানে শিক্ষক-শিক্ষার্থী ছাড়া অন্য কারো ইন্ধন আছে কি না, ব্যাপকতার ডাইমেনশন আছে কি না সেটা বুঝতে পারছি না।
এ সময় শিক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, ‘এ আন্দোলনে অন্য কারো ইন্ধন রয়েছে কি না, অন্য কারো হাত রয়েছে কি না তা আমি জানি না। আপনারা (সাংবাদিকরা) এটি খতিয়ে দেখতে পারেন। শিক্ষার্থীরা অনশন করছে এতে আমরা কষ্ট পাচ্ছি। আবার শিক্ষার্থীরা শিক্ষকদের সঙ্গে যে আচরণ করছে তাও গ্রহণযোগ্য নয়।’
মন্ত্রী বলেন, গতকাল আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথা বলতে আমাদের রাজনৈতিক দল সেখানে গিয়েছে। আমিও গতকাল কথা বলেছি। আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করতে বলেছি। তারা তখন উৎসাহের সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছিল। কিন্তু এরপর অনশনরতদের বাদ দিয়ে তারা আসতে চায়নি। ভার্চুয়ালি কথা বলতে চেয়েছে। আমরা সবাইকে নিয়ে বসতে চেয়েছি। সবাইকে নিয়ে কথা বলতে পারলে ভালো হতো। অসুস্থতার কারণে আমি সেখানে (শাবিপ্রবি) যেতে পারিনি। শিক্ষার্থীদের মধ্যে যারা অসুস্থ হয়েছেন, আমরা তাদের খোঁজ নিচ্ছি। তাদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। আমি যেহেতু অসুস্থতার কারণে যেতে পারছি না, তারা (আন্দোলনকারীরা) কথা বলতে রাজি হলেই আমাদের প্রতিনিধি দল সেখানে যাবে।
শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সঙ্গে একমত কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তাদের শুরুতে একধরনেরর দাবি ছিল। এখন উপাচার্যের পদত্যাগের দাবি করা হচ্ছে। একটি বিষয় খেয়াল করে দেখবেন- গত চারবছর কিন্তু শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ অনেক ভালো ছিল। গবেষণাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে তারা ভালো করেছে। সুনাম অর্জন করেছে। এরজন্য কাউকে তো নেতৃত্ব দিতে হয়েছে। ভালো করার কারণেই কিন্তু এখানকার উপাচার্যকে দ্বিতীয়বার নিয়োগ দেয়া হয়েছে।